জাতীয় টিভি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ: বিদ্যালয়ের বিতর্ক দল দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষকগণের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর জাতীয় টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রিতযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে।
গার্লস গাইড ও হলদে পাখি: এ সংস্থা বহুদিন থেকে চালু রয়েছে। প্রায় ৮০ জন গার্লস গাইড ও ৩০ জন হলদে পাখি রয়েছে এ সংস্থায়। গাইডের বিভিন্ন ক্যাম্প, সেমিনারে অংশগ্রহন ছাড়াও টীকা দান কর্মসূচী, বৃক্ষরোপণ অভিযান, বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে গাইড ও হলদে পাখি বোনেরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
তাছাড়া বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষা, অতিথি সংবর্ধনা জ্ঞাপনের দায়িত্ব গাইডবৃন্দের উপর ন্যস্ত থাকে। গাইডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক মিসেস শাহানা বেগম ও ফরহাত আরা বেগম।
রেড ক্রিসেন্ট: বিদ্যালয়ে রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট তহবিল। এ তহবিল থেকে প্রতি বছর আবেদনের প্রেক্ষিতে অত্র বিদ্যালয়ের গরীব ও মেধাবী ছাত্রীদেরকে বই কেনার জন্য অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়। তাছাড়া কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ছাত্রীদের তাৎক্ষনিক প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
খেলাধূলা ও বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান: শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক চরিত্র গঠনে খেলাধূলার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলার অনুশীলন শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের ছাত্রীদের জন্য রয়েছে নিয়মিত খেলাধূলার ব্যবস্থা। প্রতি বছরের শুরুতে অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে আমাদের বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সমাজসেবী ও প্রাক্তন ছাত্রীদের আগমনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ আনন্দমূখর হয়ে উঠে। শুধুমাত্র বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নয় জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া সমিতি আয়োজিত শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন আন্ত:উপজেলা, জেলা, উপ-অঞ্চল ও জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতিবছর এ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে এবং কৃতিত্ব অর্জন করে থাকে। বিদ্যালয়ের সার্বিক খেলাধূলা তত্ত্বাবধান করেন সহকারী শিক্ষক মিসেস শাহানা বেগম, জনাব ঝলক রঞ্জন তালুকদার ও মিসেস শরিফা খাতুন।
বার্ষিক মিলাদ: শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্রীদের যৌথ উদ্যোগে প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হয় বার্ষিক মিলাদ মাহফিল। উক্ত মাহফিলে ক্বেরাত, হামদ, নাত ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দোয়া কালাম এবং সিরনি বিতরণের মধ্যে দিয়ে দিনটি সুন্দর ও পবিত্র হয়ে উঠে।
সরস্বতী পূঁজা: বিদ্যালয়ের হিন্দু শিক্ষবৃন্দ ও ছাত্রীদের সহযোগিতায় প্রতি বছরই বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সরস্বতী পূঁজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অর্চনা ও প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। পূঁজার দিন বিদ্যালয়ের হিন্দু মুসলিম সকল শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মচারীবৃন্দ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন।
ইফতার মাহফিল: প্রতি বছর রমযান মাসে প্রধান শিক্ষকের মহতী উদ্যোগে বিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং কর্মচারীগণ এতে উপস্থিত থাকেন।
এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা: প্রতি বছর এস.এস.সি পরীক্ষার পূর্বে বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের এক বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রী এস.এস.সি পরীক্ষর্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী ছাত্রীদের উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে সুন্দর জীবন গড়ে তোলার জন্য এবং পরীক্ষায় ভাল ফলাফল সংক্রান্ত উপদেশমূলক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। ছাত্রীরা তাদের বড় বোনদের উদ্দেশ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
বনভোজন ও শিক্ষা সফর: বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং শিক্ষবৃন্দের তত্ত্ববধানে প্রতি বছর বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রীদে নিয়ে বনভোজন ও শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়।
শহীদ মিনার, শাপলা, দোয়েল ও মানচিত্র উদ্ধোধন: আমাদের বিদ্যালয়ে নব নির্মিত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদ বীরদের স্মৃতির উদ্দেশ্য নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক শাপলা ফুল, জাতীয় পাখি দোয়েল এবং বাংলাদেশের মানচিত্র। এই স্থাপনাগুলো নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ ও নির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সার্বিক তত্ত্ববধান করেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোঃ আবদুল মান্নান। স্থাপনাগুলো সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা করেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ শফিকুল হক। নব-নির্মিত এই স্থাপনাগুলো ২৯ মে, ২০০৮ ইং তারিখে উদ্ধোধন বিদ্যালয়ের সুযোগ্য প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ শফিকুল হক, জনাব মোঃ আবদুল মান্নান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম।
কৃতি শিক্ষর্থী সংবর্ধনা: প্রতি বছর বিদ্যালয় থেকে যেসব ছাত্রী এস.এস.সি পরীক্ষায় এ প্লাস ও গোল্ডেন এ প্লাস পায় তাদের সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে মেধাবীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পরিশেষে, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
সংগীত চর্চা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: আমাদের বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক/শিক্ষিকাগণের তত্ত্বাবধানে সংগীত শিক্ষা চলে আসছে বহুদিন থেকে। বিভিন্ন দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠান, বিদায় সংবর্ধনা, কৃতি ছাত্রী সংবর্ধনা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা শুধুমাত্র বিদ্যালয় অঙ্গনে নয় বিদ্যালয়ের বাইরে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্ব অর্জন করে বিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করছে। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ, শিশু সপ্তাহ, জনসংখ্যা দিবস সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রতিবছরই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা একাধিক পুরষ্কার অর্জন করে থাকে। জাতীয় টেলিভিশন বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ও কৃতিত্ব অর্জন করছে।
জাতীয় দিবস: বিদ্যালয়ে বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও সপ্তাহ পালন করা হয়। উল্লেখ্য যে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহীদ দিবস, বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ, জনসংখ্যা দিবস, স্বাক্ষরতা দিবস, জাতীয় শোক দিবস ইত্যাদি দিবস সুন্দরভাবে পালন করা হয়।