১৯ শতক ছিল বঙ্গীয় রেনেসাঁর সময়কাল। সেই রেনেসাঁর জন্য বাংলার চারিদিকে একটা পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। সবাই তখন থেকেই মেয়েদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারতো। সিলেটের শিক্ষিত যুবকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত 'শ্রীহট্ট সম্মেলন' শিক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শিক্ষিত যুবকরাই নারীদের শিক্ষিত করার শপথ নিয়েছিলেন। শুরুতে হোম টিউটরিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষকতা শুরু হয়। স্বামী তার স্ত্রীকে শিখিয়েছেন, ভাই তার বোনকে, বাবা তার মেয়েকে গাইড করেছে। সেভাবে সীমিত পরিসরে মেয়েদের শিক্ষা শুরু হয়।
এ সময় নারীদের শিক্ষিত করতে এগিয়ে আসেন স্পেশাল সাব রেজিস্টার রাজ চন্দ্র চৌধুরীর বিদ্যার্থী স্ত্রী হেমন্ত কুমারী চৌধুরানী। সমসাময়িক কুসংস্কার পিছনে ফেলে, ১৮৬৮ সালে জন্মগ্রহণকারী কিংবদন্তি মহিলা ১৯০৩ সালে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রতিষ্ঠার জন্য তাকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে তিনি পুনর্জন্মের আকর্ষণে আলোকিত হয়েছিলেন এবং সিলেটের মেয়েদের শিক্ষিত করার পথপ্রদর্শক হয়েছিলেন। তার স্কুলটি ১৯২৪ সালে একটি প্রতিষ্ঠিত উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।
তিনি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক ও সচিব। সিলেটের একজন মহিলা সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা 'মাসিক অন্তপুর' এর সম্পাদকও ছিলেন তিনি। বঙ্গভঙ্গের আগে তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। ১৯৫২ সালে তিনি সেখানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।